| 1. |
বাঙালি চরিত্রে বিদ্রোহ বিদ্যমান। – “নব নব সৃষ্টি' প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কীভাবে সেই বিদ্রোহের পরিচয় দিয়েছেন? |
|
Answer» ংশটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত 'নব নব সৃষ্টি' নামক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে। প্রবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী তার দীর্ঘদিনের ভাষাচর্চা থেকে অনুভব করেছেন, বাঙালিরা রাজনীতি, ধর্ম, সাহিত্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে যখন যেখানে সত্যম্ শিবম্ সুন্দরের সন্ধান পেয়েছে, তাকে গ্রহণ করার প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। অর্থাৎ, বাঙালি জাতির প্রবন্ধকতা - ই হল সমাজের যা কিছু সত্যজিৎ সুন্দর অর্থাৎ চিরন্ত সত্য আনন্দময় তাকে আপন করে দেওয়া। বাঙালি জাতি সারা জীবন তাই-ই করেছে। সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে যখন যা কিছু তার সামনে নতুন মনে হয়েছে, আনন্দদায়ক মনে হয়েছে বাঙালি তাকে আনন্দের সাথে গ্রহণ করেছে। এই কারণেই (ক) কলকাতার চলিত মুখের ভাষা কে কেন্দ্র করে কখনও রচিত হয়েছে সাহিত্য 'হুতোম প্যাঁচার নকশা' । (খ) কখনো ধর্মকে আশ্রয় করে বাঙালি গড়ে তুলেছে সাহিত্যের পরিমন্ডল 'পদাবলী কীর্তন'। (গ) আবার কখনও বাঙালি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় রচনা করেছে আরবি - ফারসি মিশ্রিত ভাষার ধরন। (ঘ) কখনো আবার লোক সাহিত্য, গানে, বাঙালি গ্রহণ করেছে লৌকিক ভাষার ছোঁয়া। এইভাবেই গতানুগতিক প্রাচীন ঐতিহ্যের দোহাই বাঙালি কখনো নতুনত্বকে বা আনন্দময় উপাদানকে অগ্রাহ্য করেনি। বড় প্রাচীন ও ইতিহাস সাথে, গতানুগতিক প্রথার সাথে বাঙালি বিদ্রোহ করেছে বারবার। এই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই বাঙালি সমাজে, সাহিত্যে, রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেছে নতুনত্ব। প্রাবন্ধিক এর মত অনুসারে এই ভাবেই বাঙালি চরিত্রে বিদ্রোহ চিরকাল বিদ্যমান। |
|